এম.মনছুর আলম, চকরিয়া :
কক্সবাজারের চকরিয়ায় উপকূলীয় বদরখালীতে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে সালিশী বৈঠকে যাওয়ার পথে জয়নাল আবেদীন বদন নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হত্যাকান্ডের ৫৮ ঘন্টার পর মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে নিহত জয়নাল আবেদীন বদনের ভাই আবদুল কাদের বাদী হয়ে হত্যার এ ঘটনায় মামলাটি দায়ের করেন। দায়েরকৃত মামলার এজাহারে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি রুজু করা হয়।
এদিকে, পুলিশ হত্যাকান্ডের ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে অভিযান চালিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামী মো.সাগর (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত সাগর ওই এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার সকাল সাড়ে ১১টার উপজেলার বদরখালীতে জয়নাল আবেদীন বদন হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত কয়েকজন আসামী তাদের বাড়িতে অবস্থান করার সংবাদ পেয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম অভিযান চালায়। অভিযানকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা গ্রেপ্তার এডানোর জন্য একটি ঘরের পেছন থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ৫-৬ রাউন্ড এলোপাতাড়ি গুলি করে ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তাদের ছুঁড়া গুলি ও ইট পাটকেল নিক্ষেপে ৫ পুলিশ সদস্য আহতও হয়। এ অবস্থায় সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও ওইদিন সন্ধ্যার দিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যতম আসামী মো: সাগরকে ধারালো দা’সহ আহতবস্থায় পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। হত্যা মামলার অন্যতম এ আসামীকে গ্রেপ্তার করার কারণে এতে হত্যাকান্ডের আসল রহস্য উম্মোচন ও এজাহারভুক্ত অপর আসামীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি অনেকটা সহজ হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, চকরিয়া উপজেলায় বদরখালী সময়বায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি কার্যালয়ে পারিবারিক জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে টুঠিয়াখালী পাড়া এলাকার আবদুল জলিল ও তার ভাতিজা আবদুল কাদের মধ্যে গত রবিবার (২৩ জানুয়ারী) সালিশী বৈঠকের ধার্য্যদিন ছিল। ওই বৈঠকে বাদী উপস্থিত থাকলেও বিবাদী আবদুল কাদের বৈঠকে যায়নি। পক্ষান্তরে বাদীর ছেলে মো: ছোটন ও তার ভাই সাগরের নেতৃত্বে ৫-৬জন সন্ত্রাসী অতর্কিত ভাবে বিবাদী পক্ষ আবদুল কাদেরের ভাই জয়নাল আবেদীন বদকে সমিতির বাহিরে রাস্তার ওপরে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করলে সে প্রাণে বাঁচার জন্য সমিতির উঠানে ঢুকে পড়ে। এসময় তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সমিতির উঠানে পৌঁছার পরে মৃত্যুকূলে ঢলে পড়েন। ওই সময় সন্ত্রাসীরা দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্রদিয়ে জয়নাল আবেদীনসহ তার ভাই ও ভাতিজাকে কুপিয়ে আহত করেন। আহতের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হত্যার ঘটনার সংবাদ পেয়ে কক্সবাজার সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এএসপি তফিকুল আলম, ওসি মুহাম্মদ উচমান গনি’র নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ উচমান গনি বলেন, জয়নাল আবেদীন বদন হত্যার ঘটনায় তার বড় ভাই আবদুল কাদের বাদী হয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে।মামলা দায়েরের পূর্বে পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনায় জড়িত অন্যতম এক আসামীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। মামলায় অপারাপর আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের টিম মাঠে কাজ করছে বলে তিনি জানান।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।